আমাদের প্রিয়তম পথপ্রদর্শক ঈমামে রব্বানী কাইয়ুমে জামানী গাওসে সামদানী মাহবুবে সোবহানী রাফিইয়েল মাকানী সুলতানুল মাশায়েখ হযরত শায়েখ আহমদ ফারূকী সেরহিন্দি মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ) দারুল বাকায় তশরীফ এনেছেন প্রায় ৫০০ বছর। রাসুলপাক (সাঃ) হতে মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ) হয়ে নক্শবন্দি মোজাদ্দেদিয়া তরিকার সোনার শেকলের ৩২ তম খলিফা কুতুবুল এরশাদ রাসুলে-নোমাঁ হযরত শাহ্ সুফী সৈয়দ ফতেহ আলী ওয়ায়েসী নক্শবন্দি মোজাদ্দেদি (রঃ), তিনি বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সুফী নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী (রঃ)-এর থেকে নক্শবন্দি মোজাদ্দেদিয়া তরিকার প্রতিনিধিত্ব অর্জন করেছিলেন। তিনি জাকেরদেরকে মুহুর্তের মধ্যে রাসুলপাক (সাঃ)-এর জিয়ারত করিয়ে দিতে পারতেন। তাঁর এই মহানুভবতার জন্য তিনি রাসুলে-নোমাঁ উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন, তাঁর মাজার শরীফ কলকাতার মানিকতলায় অবস্থিত। হজরত শাহ্ সুফী সৈয়দ ফতেহ আলী ওয়ায়েসী (রঃ)-এর পবিত্র কদমে দীর্ঘ দিন খেদমতে থেকে আওলাদে রাসুল মাশুকে খাজা হাদীয়ে জামান কুতুবুল এরশাদ মহাত্মা হযরত শাহ্ সুফী সৈয়দ ওয়াজেদ আলী মেহেদীবাগী (রঃ) খেলাফত প্রাপ্ত হন। তাঁর মাজার শরীফ কলকাতার গোবরা কবরস্থানের নিকট মেহেদীবাগে অবস্থিত। তিনি এই সত্য তরিকার পরবর্তী খলিফা হিসেবে আরেফে কামেল মুর্শিদে মোকাম্মেল হাদীয়ে জামান পীরে বেমেছেল খাজায়েনে রহমত হযরত মওলানা শাহ্ সুফী খাজা মোহাম্মদ ইউনুছ আলী এনায়েতপুরী নক্শবন্দি মোজাদ্দেদি (রঃ) কে হেদায়েতের দায়িত্ব অর্পণ করেন। খাজা এনায়েতপুরী (রঃ)-এর পাক কদমে খেদমত করে তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা আলেম পীরে কামেল মুর্শিদে মোকাম্মেল বাহরে আছরার হাদীয়ে জামান রাহনামায়ে তরিকত বাহেরে শরীয়ত হযরাতুল আল্লামা হযরত মওলানা শাহ্ সুফী মকিম উদ্দিন আহমেদ নক্শবন্দি মোজাদ্দেদি (রঃ) ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। তাঁর পবিত্র মাজার শরীফ টাঙ্গাইলের প্যারাডাইস পাড়ায় অবস্থিত। টাঙ্গাইল হুজুর কেবলাজান ও হযরত মওলানা আঃ ওয়ারেছ ইছলামপুরী নক্শবন্দি মোজাদ্দেদি (রঃ)-এর খেদমতে থেকে শরীয়তে বিভূষিত ও মারেফতে পরিপক্ক হয়ে নক্শবন্দি মোজাদ্দেদিয়া তরিকার ৩৭ তম শায়েখ ও হেদায়েতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত চরনরিনার ঈমামে রব্বানী মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ)-এর মহা আত্মার আত্মবিশ্বাসী খাজা বাবার আশেক টাঙ্গাইল বাবার নয়নের মণি ইসলামপুরী বাবার প্রাণের প্রাণ ঈমামুল আউলিয়া হযরত মওলানা শাহ্ সুফী সৈয়দ লুৎফর রহমান শাহ্জাদপুরী নক্শবন্দি মোজাদ্দেদি (রঃ)। তাঁর শাহাদাত আঙ্গুল মুবারকের ইশারায় লক্ষ লক্ষ মুর্দা দিল জিন্দা হলো। তাঁর এত্তেহাদী তাওয়াজ্জোহ বলে লক্ষ লক্ষ নবী প্রেমহীন অন্তরে নবী প্রেমের প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত হলো। তাঁর মাধ্যমে অসংখ্য কেরামতি প্রকাশ পায়; তন্মধ্যে চরদিয়া হুজুর কেবলাজান তাছের আহমেদ নক্শবন্দি মোজাদ্দেদিকে তরিকা প্রদান এবং তাঁর জীবন ধারার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দুনিয়ামুখী থেকে আল্লাহ ও রাসুলমুখী করা সর্বশ্রেষ্ঠ কেরামতি। চরদিয়া বা কল্যাণপুরী হুজুর কেবলাজানের বয়স তখন ২৭ বছর। তাঁর ক্বলব জুড়ে তখন দুনিয়ার খেয়াল, তিনি দুনিয়ার ধনদৌলত-প্রতিপত্তি নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন; ইসলামিক কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও আখেরাত হতে সম্পূর্ণ বিমুখ ছিলেন।
এমন সময় তিনি একটি জটিল রোগে আক্রান্ত হলেন। ভারত ও বাংলাদেশের খ্যাতিমান ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করিয়েও তিনি আরোগ্য লাভ করলেন না। ডাক্তার তাঁর আয়ুস্কাল নির্ধারণ করে অল্প কয়েক দিন পর মৃত্যু নিশ্চিত বলে দিলেন। পরিবারের সকলের মধ্যে শোকের ছায়া পড়ে গেল, হুজুর কেবলাজানের হৃদয় ভেঙ্গে গেল, তাঁর বেঁচে থাকার আশা মন থেকে বিলীন হয়ে গেল। এমতবস্থায় তিনি দিশাহীন ও উদ্দেশ্যহীন ভাবে বাড়ি থেকে সিলেট শহরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন। পথিমধ্যে তিনি অলৌকিক ভাবে চরনরিনা হুজুর কেবলাজান সম্পর্কে জানতে পারলেন এবং তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত চরনরিনা পাক দরবার শরীফের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। দরবার শরীফে পৌছাঁনোর কিছু পূর্বে তাঁর সঙ্গে চরনরিনা হুজুর কেবলাজানের কাছে বায়আত নেয়া এক জাকের ভাই এর সাক্ষাত হয়। তিনি কল্যাণপুরী হুজুর কেবলাজানের সমস্যার বিবরণ শুনেন এবং তারপর তাঁকে সঙ্গে নিয়ে চরনরিনা পাক দরবার শরীফে গিয়ে উপস্থিত হন। তখন চরনরিনা পাক দরবার শরীফ সবেমাত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চরনরিনা হুজুর কেবলাজান সকলকে তরিকা দেওয়ার সময় বললেন, “যাও ক্বলবের খেয়ালে নামায, কালাম, ওজিফা, আমল ঠিক মতো আদায় করিও”। কিন্তু কল্যাণপুরী হুজুর কেবলাজানের সময় তিনি বললেন, “যাও, কোটি কোটি মানুষকে বাঁচাও”। এই কথা শুনে যিনি কল্যাণপুরী হুজুর কেবলাজানকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি বললেন, “বাবা, ইনি তো নিজেই বাঁচবে না, কোটি কোটি মানুষ কিভাবে বাঁচাবে”? চরনরিনা হুজুর কেবলাজান বিস্তারিত জানার পর বললেন, “আমি আল্লাহর কাছে থেকে তোমার হায়াত এনে দিলাম, যাও সারা বিশ্বে তরিকার দাওয়াত পৌঁছে দিয়ে কোটি কোটি মানুষকে বাঁচাও”। এই ছিল হুজুর কেবলাজানের সত্য তরিকায় প্রবেশ ও জীবন প্রবাহের গতি পথ পরিবর্তনের সূত্রপাত। এটাই ছিল দয়াল দাদা হুজুর কেবলাজানের সবচেয়ে বড় কেরামতি। চরনরিনা হুজুর কেবলাজানের এই জ্যোতি দ্বারা এখন দৌলতপুর থানার কল্যাণপুরের চরদিয়া পাক দরবার শরীফ হতে সারা বিশ্ব আলোকিত হচ্ছে। দয়াল দাদা হুজুর শাহজাদপুরী (রঃ) চরদিয়া হুজুর কেবলাজানকে তাঁর পাক কদমে দীর্ঘ ৩২ বছর শরীয়ত, তরিকত, মারেফত ও হকিকতের সমস্ত জ্ঞানের অলি-গলি চিনিয়ে, নিজ প্রতিনিধি বানিয়ে ও হেদায়েতের দায়িত্বভার অর্পণ করে, লক্ষ লক্ষ জাকেরকে এতিম করে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে করতোয়া নদীর কিনারে মাটির চাদর গায়ে দিয়ে নিজ দরবার শরীফে ইয়া রব্বি হাবলি জকেরান ইয়া রব্বি হাবলি জকেরান বলে কাঁদতেছেন। বর্তমান বিশ্ব চরনরিনা হুজুর কেবলাজানের সুযোগ্য প্রতিনিধি ও মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ)-এর বর্তমান নায়েব চরদিয়া বা কল্যাণপুর হুজুর কেবলাজান। চরদিয়া পাক দরবার শরীফ হতে শরীয়ত ও মারেফতের যাবতীয় হুকুম-আহকাম মেনে সত্য তরিকার প্রচার হচ্ছে এবং দরবার-এ চরদিয়া, চরদিয়া পাক দরবার শরীফ, কল্যাণপুর, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ হতেই বিশ্বব্যাপী মোজাদ্দেদিয়া তরিকার নূর ব্যাপ্তি লাভ করছে।