সম্মান দানকারী আল্লাহ পবিত্র কুরআনে তাঁর অলিদের শান, মান ও মর্যাদা সম্পর্কে বিভিন্ন আয়াত নাযিল করেছেন, যেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
সূরা ইউনুস
أَلا إِنَّ أَولِياءَ اللَّهِ لا خَوفٌ عَلَيهِم وَلا هُم يَحزَنونَ ُ
অর্থ: শুনে নাও! নিশ্চয় আল্লাহর অলিগণের না আছে কোন ভয়, না কোন দুঃখ। (সূরা ইউনুস, আয়াত-৬২)
সূরা তওবা
وَقُلِ اعمَلوا فَسَيَرَى اللَّهُ عَمَلَكُم وَرَسولُهُ وَالمُؤمِنونَ وَسَتُرَدّونَ إِلىٰ عٰلِمِ الغَيبِ وَالشَّهٰدَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِما كُنتُم تَعمَلونَُ
অর্থ: এবং আপনি বলুন, “কাজ করো। এখন তোমাদের সকল কর্মকান্ড দেখেন আল্লাহ, তাঁর রাসুল এবং মুমিনগণ, আর অবিলম্বে তোমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে, যিনি অদৃশ্য ও দৃশ্য সবই জানেন। অতঃপর তিনি তোমাদের কর্ম জানিয়ে দেবেন”। (সূরা তওবা, আয়াত-১০৫)। এ আয়াতে স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, নবী-রাসুল (আঃ) গণ এবং অলি-আল্লাহ (রঃ) গণ (যাদের এ আয়াতে মুমিন বলা হয়েছে) হাজির ও নাজির। তাফসিরে রূহুল বয়ানে মুমিনদের অলি বলা হয়েছে এ আয়াতের ব্যাখ্যায়। রাসুল (সাঃ) ও সুফী (রঃ) গণ হাজির (উপস্থিত) ও নাজির (দেখেন); এর অর্থ হলো উনারা আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতায় যে কোন স্থানে উপস্থিত হতে পারেন এবং আমাদের কাজ সমূহের সাক্ষীও হয়ে থাকেন।
সূরা আরাফ
مَن يُضلِلِ اللَّهُ فَلا هادِىَ لَهُ وَيَذَرُهُم فى طُغيٰنِهِم يَعمَهونَُ
অর্থ: আল্লাহ যাকে বিপদগামী করেন, তার কোন পথপ্রদর্শনকারী (হাদী) নেই এবং তাদেরকে ছেড়ে দেন যেন তারা নিজেদের অবাধ্যতার মধ্যে উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়। (সূরা আরাফ, আয়াত-১৮৬)
সূরা কাহাফ
وَمَن يُضلِل فَلَن تَجِدَ لَهُ وَلِيًّا مُرشِدًا ُ
অর্থ: এবং তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তবে তার কোন পথপ্রদর্শনকারী মুর্শিদ (অভিভাবক) পাবে না। (সূরা কাহাফ, আয়াত-১৭)
সূরা বনী ইসরাইল
وَمَن يَهدِ اللَّهُ فَهُوَ المُهتَدِ وَمَن يُضلِل فَلَن تَجِدَ لَهُم أَولِياءَ مِن دونِهِ ُ
অর্থ: আল্লাহ যাকে পথ প্রদান করেন, সে-ই পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তবে তাদের জন্য তাকে ব্যতীত কোন আউলিয়া (অভিভাবক) পাবে না। (সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত-৯৭)
সূরা রাদ
وَمَن يُضلِلِ اللَّهُ فَما لَهُ مِن هادٍ ُ
অর্থ: আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার কোন হাদী (পথপ্রদর্শক) নেই। (সূরা রাদ, আয়াত-৩৩)
সূরা আয যুমার
وَمَن يُضلِلِ اللَّهُ فَما لَهُ مِن هادٍ ُ
অর্থ: আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার কোন হাদী (পথপ্রদর্শক) নেই। (সূরা আয যুমার, আয়াত-২৩)
সূরা আয যুমার
وَمَن يُضلِلِ اللَّهُ فَما لَهُ مِن هادٍ ُ
অর্থ: আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার জন্য কোন হাদী (পথপ্রদর্শক বা হেদায়েতকারী) নেই। (সূরা আয যুমার, আয়াত-৩৬)
সূরা আল-মুমিন
وَمَن يُضلِلِ اللَّهُ فَما لَهُ مِن هادٍ ُ
অর্থ: আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোন হাদী (পথপ্রদর্শক) নেই। (সূরা আল-মুমিন, আয়াত-৩৩)
সূরা আশ-শুরা
وَمَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِن وَلِىٍّ مِّنۢ بَعْدِهِ ُ
অর্থ: আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, আল্লাহর মোকাবেলায় তার কোন অলি (অভিভাবক বা হেদায়েতকারী) নেই। (সূরা আশ-শুরা, আয়াত-৪৪)
উপরের আয়াতগুলোর আলোকে আমরা বলতে পারি, নিঃসন্দেহে পীর, মুর্শিদ, হাদী, আউলিয়া, অলি যে নামেই তাদেরকে অভিহিত করিনা কেন, আল্লাহর সত্য-সঠিক পথ প্রাপ্তির জন্য উল্লিখিত এমন একজন পথপ্রদর্শনকারী অভিভাবক দরকার সকলেরই। আল্লাহর অলিদের কাছে গিয়ে বায়আত হয়ে তরিকা গ্রহণ করে তাঁদের সহবতে থাকলে, আনুগত্য করলে, সম্মান করলে, আদব দেখালে সত্যপথ অনুসন্ধানকারী মানুষের ক্বলবে জিকির জারীর মাধ্যমে চিত্ত প্রশান্তি লাভ করে এবং সর্বোপরি মুর্শিদের ওসিলায় আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ)-এর নৈকট্য অর্জন নিশ্চিত হয়। এ জন্যই মওলানা জালালুদ্দিন রুমী (রঃ) মসনবী শরীফে লিখেছেন- “এক মূহুর্ত কোন আউলিয়ার সংসর্গে থাকা একশ বছরের বেরিয়া (অকপট) বন্দেগী অপেক্ষাও উত্তম”।